কেএম সোহেব জুয়েলঃ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের উত্তর বাহেরচর এলাকায় অস্থায়ী নদীর বাঁধ নির্মাণে হঠাৎ স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় মঙ্গলবার (৬ মে) বিকালে সন্ধ্যা নদী পাড়ে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ, স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ও এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন।

সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন হতে মূল্যবান এলাকা রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষা মূলককাজ যথাস্থানে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয়দের নদীরপাড়ে ১ কিলোমিটার জুড়ে এই মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বাঁধ নির্মাণের স্থান অযৌক্তিকভাবে সরিয়ে নেওয়ায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথে বাধা সৃষ্টি হবে। এতে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষ এই অস্থায়ী বাঁধের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।

ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ দীর্ঘ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, ঈদিলকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সমাজসেবক বিএনপি নেতা মো. মোয়াজ্জেম বিশ্বাস , মেহেদী হাসান নয়ন, আব্দুস সালাম মোল্লা, সাবিনা বেগম, মোহাম্মদ কাঞ্চন মোল্লা, মোহাম্মদ আজাহার ঢালী, মোহাম্মদ শাহাদাত আকন,মো: হারুন জমাদ্দার, মোহাম্মদ জব্বার মোল্লা আয়নাল মোল্লা, হাবিবুর রহমান, মোঃ রকমান হাওলাদার, মোসাম্মৎ নাজমুন নাহার,, মোসাম্মদ জেসমিন বেগম, সাইলু বেগম, মো কেনান ব্যাপারী, নজরুল হাওলাদার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, "যেখানে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল, সেটি এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করেই নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু এখন প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার চাপে বা ব্যক্তিস্বার্থে এ স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।"
এ সময় সালাম মোল্লা বলেন, “আমরা কৃষক মানুষ, আমাদের ফসল আর ভিটেমাটি রক্ষার জন্য এই অস্থায়ী বাঁধটি ছিল একমাত্র ভরসা। এখন সেটাও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, পরিকল্পনার কিছু কারিগরি দিক বিবেচনায় অস্থায়ী বাঁধের স্থান সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে আমরা এলাকাবাসীর উদ্বেগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং প্রয়োজনে আলোচনা করে সমাধানে যাব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলাধীন দেহেরগতি ইউনিয়নের অন্তর্গত সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন হতে বাহেরচর ঘোষকাঠি ও তৎসংলগ্ন মূল্যবান এলাকা রক্ষা করার জন্য অস্থায়ী প্রতিরক্ষা মূলক কাজ চলমান রয়েছে। সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন রোধের এ প্রকল্পে ৬৮ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
কিন্তু নির্ধারিত নদী ভাঙ্গনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বাদ দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থে নিজের বাড়ি রক্ষায় বরাদ্দকৃত জিও ব্যাগ  নদীতে ফেলার চেষ্টা করছেন একটি মহল ।  যা ব্যাপক অনিয়ম এর মধ্যে পড়ে।  বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করেন এবং যথাস্থানে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবরের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  তারা দাবি করছেন সরকারি বরাদ্দের ভাঙ্গন প্রতিরোধের প্রকল্পটি যথাস্থানে সঠিকভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়।