মেয়াদপূর্তির কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও বীমার টাকা বুঝে পাচ্ছেন না পপুলার লাইফ ইন্সুইরেন্স গ্রাহকরা।

বাবুগঞ্জ (বরিশাল)প্রতিনিধি::বরিশাল বাবুগঞ্জে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতারণায় মেয়াদপূর্তির কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও বীমার টাকা বুঝে পাচ্ছেন না শতাধিক গ্রাহকরা।
তাদের প্রতারনার শিকার হয়ে গ্রাহকের স্বপ্ন এখন দু:স্বপ্নে পরিণত। বীমা আইন অনুযায়ী মেয়াদ উর্ত্তীণের ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও বিপরীত পথে হাঁটছে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বরিশাল অফিস।
ক্যান্সার রোগী থেকে শুরু করে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত গ্রাহকরা মেয়াদ পূর্ণ হলেও এখন পর্যন্ত বুঝে পাননি তাদের দাবিকৃত টাকা।
নানান অজুহাতে সময়ক্ষেপন করে একের পর এক প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বারবার ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না শতাধিক গ্রাহক।
এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের কষ্টার্জিত জমানো টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন গ্রাহকরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাসিক ও বার্ষিক স্কীমে মেয়াদপূর্ণ হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে, এমন অসংখ্য গ্রাহক প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন বীমা অফিসে ও কর্মীদের বাড়িতে।
অবস্থা এতোটাই বেগতিক, ১৮ই মে বাবুগঞ্জ পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের রাবেয়া বেগম নামের এক ফিল্ট অফিসারকে আটকে রাখে গ্রাহক। আটকিয়ে রাখা হয় তার ব্যবহারিত মোবাইল ফোন। পরে স্থানীয়রা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এছাড়া প্রতিনিয়ত বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে।
সরেজমিনে ,বাবুগঞ্জ রাকুদিয়ার ভুক্তভোগী জাকিয়া বেগম বলেন, আমি এই কোম্পানিতে একটি বীমা করি যার পলিসি নং ১৬০৩০০৩২৬১ ।আমি ক্যান্সার রোগে একটি মেডিকেলে সাত মাস অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছি । টাকার খুব প্রয়োজন ছিল। মেডিকেলের কাগজ সহ ঢাকায় কোম্পানির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর পরেও কর্মকর্তারা চেক দিতে পারছেন না। নানা অজুহাতে বার বার ঘুরাচ্ছেন। কর্মকর্তাদের এমন আচরণে জমানো অর্থ ফেরৎ পাওয়া নিয়েই শঙ্কিত তারা।
এছাড়া পিঞ্জিরা বেগম নামে ১৬০৩০০৩২৫১ এক গ্রাহক জানান প্রায় আড়াই বছর হল আমার বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এতদিন ধর্ণা দিয়েও বীমার টাকা পেলাম না। জানিনা বেঁচে থাকতে এ টাকা পাবো কি না।টাকাটা পেলে একটু উন্নত চিকিৎসা করাতে পারতাম।
পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের আরেক গ্রাহক বকুল বেগম বলেন, দুই বছর হল আমার বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে কিন্তু আজ নয়তো কাল করে শুধু সময় নষ্ট করছে কর্তৃপক্ষ।
মেয়াদপূর্ণ হওয়া গ্রাহক – রেশমা বেগম, হনুফা বেগম , ফারহানা বেগম, আকলিমা বেগম সহ আরো অনেক গ্রাহকের একই রকম অভিযোগ। এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রকল্প পরিচালক মাসুদ রানা বলেন, পপুলার কোম্পানীর আইন অনুযায়ী মেয়াদ পূর্ণের ৯০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার কথা।
পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০২২ /২৩ সালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এমন অসংখ্য ফাইলের গ্রাহকরা এখনো তাদের বীমার টাকা বুঝে পাননি।
আমরা ঢাকায় ফাইল প্রেরণ করি কিন্তু তারা দাবিকৃত টাকার চেক প্রেরণ না করলে আমরাতো আর গ্রাহকদের টাকা বাড়ী থেকে এনে দিতে পারবো না।
Share this content:
Post Comment