গৌরনদীতে নোটিশ পেয়ে আহতর থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায়ের অভিযোগ

- পৌর কর্মচারীর উপর হামলায় বিএনপি নেতাকে নোটিশ
আরিফিন রিয়াদ, গৌরনদী (বরিশাল) :
বরিশালের গৌরনদী পৌরসভায় ঢুকে কর্মচারী গিয়াস উদ্দিন খন্দকারের ওপর হামলাকারী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়াকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। রোববার ১৬ মার্চ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে নোটিশের জবাব দিতে এবার তার (গিয়াস) কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর আদায়ের ফের অভিযোগ পাওয়া গেছে ফরিদ মিয়া ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকেলে পৌরসভার পানি শাখার কর্মচারী গিয়াস উদ্দিন খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, ১৬ মার্চ রাতে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়ার নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে রাতেই উপজেলা বিএনপির সদস্য শরিফ জহির সাজ্জাত হান্নান, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শরীফ শফিকুর রহমান স্বপন, বিএনপি নেতা জসিম শরিফসহ কয়েকজন নেতা আমার কাসেমাবাদের গ্রামের বাড়িতে এসে আমাকে জোরপূর্বক গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একটি সাদা কাগজে আমার জোরপূর্বক স্বাক্ষর রেখে হামলাকারী ফরিদ মিয়ার সাথে আমার বেশ কয়েকটি ছবি তুলে রাখা হয়। এ সময় সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনকে ফোন দিয়ে আমাকে ধরিয়ে দেয়ায় ভয়ে আমি তাদের কোন কথার প্রতিবাদ করতে সাহস পাইনি। প্রাণ বঁাচাতে তারা যা যা করতে বলেছেন আমি তাই করেছি।
উল্লেখ্য, প্রভাব বিস্তারের জন্য অফিস চলাকালীন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়া ও তার সহযোগিরা কক্ষে প্রবেশ করে গৌরনদী পৌরসভার পানি শাখার কর্মচারী গিয়াস উদ্দিন খন্দকারকে মারধরসহ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ কারণে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ফরিদ মিয়া সম্প্রতি দলবল নিয়ে গৌরনদী পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশ করে পৌরসভার কর্মচারী গিয়াস উদ্দিন খন্দকারকে মারধরসহ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে সাংগঠনিক শিষ্টাচার ও সভ্য আচরণ অগ্রাহ্য করে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছেন। সুতরাং বিষয়টি অতীব জরুরী হওয়ায় কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেয়ার জন্য পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়াকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পৌরসভার পানি শাখার কর্মচারী ও উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন খন্দকারের ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন খন্দকার মঙ্গলবার (১১ মার্চ ) অভিযোগ করে বলেন, দুপুরে পৌরসভায় ঢুকে সাবেক এমপি স্বপনের নাম ভাঙ্গিয়ে টিসিবির মাল নিয়ে দলীয় প্রভাব খটানোর চেষ্টা করেন গৌরনদী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়া। বিষয়টি আমি জানতে চাইলে তিনি (ফরিদ) আমার ক্ষিপ্ত হয়ে ওপর অর্তকিতভাবে হামলা চালায়। উপর্যপুরি কিল-ঘুষি ও চর থাপ্পর মেরে আমাকে আহত করা হয়। এসময় সাথে তার ক্যাডার বাহিনির সদস্যরাও ছিল। হামলার সময় ফরিদ মিয়ার আচরণ ব্রিটিশদের লটদের মত ছিল বলেও উল্লেখ করেন গিয়াস উদ্দিন। এদিকে হামলার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদ মিয়া বলেন, আমার সাথে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে নি। তবে আমার লোকজনের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে যা ইউএনও সাহেব মিমাংসা করে দিয়েছেন। তবে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. আবু আবদুল্লাহ খান জানান, এই বিষয়ে আমি কোন ধরনের মিমাংসা করি নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Share this content:
Post Comment